1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

ফের বিস্ফোরক শুভেন্দু, পিকের উদ্যোগ কি ব্যর্থ? জল্পনা বাংলায়

  • Update Time : শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০
  • ১৮৪ Time View

বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা : ফের কড়া কথা শুভেন্দুর মুখে। প্রশান্ত কিশোরের প্রচেষ্টার পরও যে তিনি নমনীয় হননি, তার প্রমাণ দিয়েই যেন নন্দীগ্রামে বললেন, আমফান বিপর্যয়ের পর এখানে কারা এসেছিলেন? এখন তো অনেকে অনেক কথা বলছেন। তখন তাঁদের দেখা পাওয়া যায়নি কেন? যদিও কারও নাম উচ্চারণ করেননি। তবে তাঁর ইঙ্গিত যে দলের শীর্ষ নেতাদের দিকে, তা বুঝতে কারও অসুবিধে হয়নি।

নন্দীগ্রাম দিবসের পরই ভুল ভেঙেছে তৃণমূলের। ওই দিন বেলার দিকে তৃণমূল বিধায়ক তথা বাংলার পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ডাকে অরাজনৈতিক সভা হয় নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে। আর বিকেলে নন্দীগ্রামেরই হাজরাকাটায় পাল্টা সভা ছিল তৃণমূলের। কিন্তু সেদিন শুভেন্দু দেখিয়ে দিয়েছেন অরাজনৈতিক সভা করেও কী ভাবে আলোড়ন তৈরি করে দেওয়া যায়! ওই সভা কার্যত বিশাল মাপের জনসভায় রূপ নিয়েছিল। রাস্তায় ছিল জনস্রোত। অন্যদিকে, হাজরাকাটায় পাল্টা সভায় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পূর্ণেন্দু বসু বা সাংসদ দোলা সেন থাকলেও সেই সভা পরিণত হয়েছিল পথসভায়। এ ছাড়া, শুধু দুই মেদিনীপুরই নয়, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মালদা, মুর্শিদাবাদ থেকে কোচবিহার, শিলিগুড়িতে পর্যন্ত ‘আমরা দাদার অনুগামী’ বলে বকলমে শুভেন্দুর অনুকূলে পোস্টার পড়েছে। বোঝা যাচ্ছে, শুভেন্দুকে হারালে এই জেলাগুলিতে তৃণমূলের সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে। হয়তো সেই কারণে তৃণমূলের শীর্ষমহল নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের সবচেয়ে বড় খবরটি ছিল, ওইদিন তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর (‌পিকে)‌ ছুটে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর কাঁথির বাড়িতে। উদ্দেশ্য ছিল, বুঝিয়ে–সুজিয়ে শুভেন্দুর অভিমান দূর করা। যদিও শুভেন্দু অধিকারী বা তাঁর ভাই দিব্যেন্দু বা সৌমেন্দুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। শুভেন্দু তখন কালীপুজোর উদ্বোধনে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তবে দেখা হয়েছে শুভেন্দুর বাবা তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর সঙ্গে। শেষে শিশিরবাবুর সঙ্গেই বৈঠক করেন পিকে। বৈঠকে দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে, স্বাভাবিক কারণেই তা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে সূত্রের খবর, পিকে তাঁকে প্রশ্ন করেন, শুভেন্দু কি বিজেপিতে যাচ্ছেন? শিশিরবাবু জবাব দেন, না। বাজে কথা। তখন পিকে প্রশ্ন করেন, তা হলে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছে কেন? শিশিরবাবু বলেন, শুভেন্দুকেই সে কথা জিজ্ঞেস করুন। পিকে প্রশ্ন করেন, শুভেন্দু কেন দলের সঙ্গে কথা বলছেন না? শিশিরবাবু তখন পাল্টা প্রশ্ন করেন, আপনারা কি কখনও তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন? এর পর শুভেন্দুর মোবাইলে ফোন করে কথা বলিয়ে দিতে শিশিরবাবুকে বলেন প্রশান্ত কিশোর। সূত্রের খবর, ফোন ধরলেও প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকার করেন শুভেন্দু।

শিশিরবাবুর সঙ্গে ওই বৈঠক বা শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর ফোনালাপ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল কম ছিল না। এখানেই শেষ হয়নি তৃণমূলের উদ্যোগ। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকসি নিজে ফোন করে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন শুভেন্দুকে। কিন্তু তৃণমূলের শীর্ষ মহল যতই তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করুন না কেন, দলের কয়েকজন নেতা যে ভাবে প্রতিদিন শুভেন্দুকে আক্রমণ করে চলেছেন, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে বলে দলেরই একাংশ মনে করছে। বিশেষ করে দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে গাছের তলায় বড় হয়েছ। চারটে মন্ত্রিত্ব পেয়েছ, চারখানা চেয়ারে আছ, কটা পেট্রোল পাম্প কিনেছ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে তোমাকে মিউনিসিপ্যালিটিতে আলু বিক্রি করতে হত।’ কল্যাণের এই কথায় শুভেন্দু–বিতর্কে আরও জটিলতা বেড়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। শুধু কল্যাণবাবুই নন, তৃণমূলের শীর্ষনেতাদের বেশ কয়েকজনও নাকি শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার পক্ষপাতী। দলের অভ্যন্তরে এ নিয়ে তাঁরা মতামত জানাতে দ্বিধাও করছেন না। সেই খবরও শুভেন্দুর কানে পৌঁছেছে। বিষয়টি তাই অনেকটাই ঘোরালো হয়ে উঠেছে।

এদিকে, ওইদিনই শুভেন্দুর একটি মন্তব্যে রাজ্যের রাজনীতি বিশ্লেষকদের ভুরু কুঁচকে যায়। ঘাটালের বিজয়া সম্মিলনীতে শুভেন্দু মন্তব্য করেন, ‘কাঁথির মানুষ কলকাতার নেতাদের চাকর–বাকর নয়।’ ওই অনুষ্ঠানে কাঁথি তথা মেদিনীপুরের মানুষ সম্পর্কে কলকাতার মানুষের তথা নেতাদের ধারণা কী, তা তুলে ধরেন তিনি। রীতিমতো ক্ষোভের সঙ্গে মনে করিয়ে দেন বিদ্যাসাগরের কথা। যাঁর লেখা বর্ণ পরিচয় পড়ে বাঙালিকে অক্ষর চিনতে হয়। মেদিনীপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথাও মনে করিয়ে দেন। অথচ কলকাতার মানুষ সে–সব মনে রাখেন না, তাঁরা মনে রাখেন মেদিনীপুরের কারা কলকাতায় কার বাড়িতে কাজ করেন! এর পর শুক্রবারও শুভেন্দু যে মন্তব্য করেছেন, তাতে সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে। এদিন নন্দীগ্রামে একটি সভায় রীতিমতো আক্রমণাত্মক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কারও নাম উচ্চারণ না করলেও তিনি বেশ কড়া ভাষায় বলেন, ‘আমি এখানকার সব উৎসবে থাকি, সব অনুষ্ঠানে থাকি। কোথাও বোমা বা গুলির আওয়াজ শোনা গেলেই ছুটে আসি। মানুষের চোখের জল মোছাতে আসি। আমফানের পর এখানে কী হয়েছিল, তা কারও অজানা নেই। কে এসেছিল তখন? অনেক নাম তো শুনেছি। কিন্তু তখন কারও দেখা পাওয়া যায়নি। কেউ আসেনি। তখন এক মাস ধরে এখানে বিদ্যুতের সমস্যা ছিল। আমি সেই সময় প্রতিদিন চেষ্টা করে এখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি।’

এখানেই থেমে যাননি তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছেন, ‘নিজের কথা নিজে বলা শোভা পায় না। নিজেকে নিজে বড় বললে সে বড় হয়ে যায় না, লোকে যাকে বড় বলে, সে–ই বড় হয়।’ রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এ কথা বলে তিনি দলনেত্রীকেই কার্যত নিশানা করেছেন। আরেকটি মহলের বক্তব্য, দলনেত্রীর ভাইপোই ছিলেন তাঁর নিশানায়। তবে প্রশান্ত কিশোরের দৌত্যও যে তাঁকে সে ভাবে প্রভাবিত করেনি, তা শুক্রবার নন্দীগ্রামের ওই সভায় প্রমাণ দিয়ে দিয়েছেন‌ শুভেন্দু। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে শুভেন্দু–বিতর্কে কি কোনও ইতিবাচক সাড়া পাননি প্রশান্ত কিশোর? অন্যদিকে, শুভেন্দু–বিতর্কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটি মন্তব্যে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এদিন মানিকতলার শান্তিনাথতলা বারোয়ারি শ্যামা সমিতির কালীপুজোর উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন তৃণমূলে যা চলছে, বাংলার মানুষ তাতে পুরোপুরি হতাশ। তৃণমূল কোনও দল নয়, সম্পত্তি। তাই এত গোলমাল। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে আসবেন কিনা, জানা নেই। তবে তৃণমূলের পিকে এখন ড্যামেজ কন্ট্রোলের ভূমিকা নিয়েছেন। তবে এতে লাভ বিশেষ হবে বলে মনে হয় না।’ স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, শুভেন্দু কি তা হলে বিজেপিতেই যাচ্ছেন? যদিও এই প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..